দাউদকান্দির গৌরীপুরে ফুট ওভার ব্রিজ থাকার পর ও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার
দাউদকান্দি কুমিল্লা প্রতিনিধি
আনিসুর রহমান খান
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর স্বস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ন হাসপাতাল, উপজেলার হতদরিদ্র শত শত রোগী আসে এই হাসপাতালে। উপজেলার মাঝখান দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। হাসপাতালে আসা যাওয়া করতে গেলে রোগীদের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পারাপার করতে হয়। সরকার যদিও পথচারীদের পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন করে দিয়েছেন কিন্তু বয়সের ভার নুয়ে পড়া এবং অসুস্থ রোগীরা অনেক ব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে পারে না, কারণ তাদের সেই শক্তি সামর্থ নাই। এ কারণে অনেক রোগী ফুট ওভারব্রীজ ব্যবহারে অনীহা জাগে। আবার হাসপাতালের উল্টোদিকে ফর্মেসী থাকায় রোগীরা হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ নিতে রাস্তা পার হতে হয় । ফুটওভার ব্রিজটি গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডের একপাশে হওয়া হাসপাতালে যেতে রোগীরা ফুট আভার ব্রীজটি ব্যবহার করেন না। ফলে প্রায় ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা ঝরে যাচ্ছে অনাকাঙ্খিত প্রাণ।
মানুষ যেন এভাবে পারাপার না হতে পারে সে জন্য সড়ক বিভাজকে উচু করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই উচু সড়ক ডিভাইডার আটকাতে পারেনা পথচারিক। আল্প সময়ে যাতায়াতের জন্য উচু ডিভাইডার ভেঙে রাস্তা পারাপার হচ্ছে পথচারীরা। মহাড়কের এই ডিভাইডার পার হওয়া সহজ কথা না। জনগন বেশ কায়দা করসত করে মহাসড়ক পারাপার হয়।
একষ্ট করে আসার কী দরকার ছিল? ফুটওভার ব্রিজ কেন ব্যবহার করলেন না?- জানতে চাইলে মধ্যবয়সী নারী রহিমা বেগম বললেন, ‘আমার গোড়ালিতে ব্যাথা’। এভাবে চলতে গেলে তো ঝুঁকি থাকে। সেটা দেখতেও তো ভালো লাগে না- এমন মন্তব্যের জবাবে ওই নারী বলেন, ‘শুনেছি অনেক জায়গায় জেব্রা ক্রসিং আছে, আন্ডার পাস আছে। এখানেও সেটা হলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়।’
ওই নারীর না হয় গোড়ালিতে ব্যাথা। কিন্তু তার মতো অন্যদের? শত শত মানুষকেই এভাবে পার হতে দেখা গেলো। কোথাও তারা সড়ক বিভাজককে ভঙ্গা জায়গায় কায়দা করে এর উপর দিয়ে পার হয়।
পথচারীদের বেশিরভাগই সময় হাসপাতালে যেতে কিংবা ঔষধের ফার্মাসিতে যেত বাঁচাতেই এভাবে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে, কেউ কেউ আবার বলছেন, সিড়ি ভাঙতে কষ্ট হয়। এ জন্য আন্ডার পাস কিংবা জেব্রা ক্রসিং থাকলে আমাদের চলাচলে সুবিধা হয়।
কিন্তু আন্ডার পাস কিংবা জেব্রা ক্রসিং স্থাপনের পরও ফুটওভার ব্রিজের বদলে সড়ক ধরে চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে তা বলা যাবে না। মানুষকে সচেতন হতে হবে।
পথচারী দেলোয়ার হোসেন বলেন ‘দিনে অনেকবারই রাস্তার এপার থেকে ওপারে যাওয়া লাগে। সময় বাঁচাতে আমরা ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করি না। শর্টকাট পারাপারের জায়গা পেয়েছি তাই সহজেই পার হয়ে যাই। ঝুঁকি রয়েছে কিন্তু জরুরি মুহূর্তে সেটা মনে থাকে না।’
পথচারীদের এই সামান্য ‘কষ্ট বাঁচানোর চেষ্টা’র কারণে সড়কে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পাশাপাশি প্রাণঘাতি দুর্ঘটনাও ঘটে নানা সময়। কিন্তু যেন ভ্রুক্ষেপ নেই কারও।
পথচারীদের এই প্রবণতা ঠেকাতে নানা সময় জরিমানার আরোপ করেও সুফল মেলেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পদক্ষেপে কিছুদিন শৃঙ্খলা থাকলেও পরে আবার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে ফিরে যায় পথচারীরা। পুলিশ প্রায়ই ঘটা করে পথচারীদেরকে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার উদ্বুদ্ধ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহিউদ্দিন বলেন গৌরীপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনের এই জায়গাটিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে সেজন্য উচু ডিভাইডার রাখা হয়েছিল, জনস্বার্থে পকেট করা হয়েছিল, দুর্ঘটনা এড়াতে আবারও তা বন্ধ করে দেওয়া হয় ।, কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য উঁচু ডিভাইডার টি ভেঙে পথচারী পারাপারের জন্য সুযোগ করে দেয়। ফলে আবারো ঝুঁকির মুখে পড়লো জনগণ জনগণের দাবি ফুটওভার ব্রীজটি ব্যবহারের জন্য বাধ্য করতে হবে। ফুটওভার ব্রিজের আশেপাশের আধা কিলোমিটার জায়গা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে জনগনকে বাধ্য করতে হবে।
বিষয়টি বিবেচনায় এনে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সমীক্ষা চালিয়ে কিভাবে জনগণকে ফুটওভার ব্রিজ ব্যাবহারে বাধ্য করা যায় সে ব্যাপারে সচেষ্টা হবেন এবং জনগণকে দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা করবেন এটা এখন সময়ের দাবি।
_________________________
_________________________
আনিসুর রহমান খান
দাউদকান্দি প্রতিনিধি
তারিখ-২০-০২-২০২৪ইং